Summary
পরিপাক গ্রন্থী:
যেসব গ্রন্থি বিভিন্ন উৎসেচক সমৃদ্ধ পাচকরস ক্ষরণ করে, তাদের পরিপাক গ্রন্থি বলে। মানবদেহে পাঁচ ধরণের পৌষ্টিক গ্রন্থি রয়েছে:
- লালাগ্রন্থি
- যকৃত
- অগ্ন্যাশয়
- গ্যাস্ট্রিক গ্রন্থি
- আন্ত্রিক গ্রন্থি
লালাগ্রন্থি:
মানুষের মুখগহ্বরে তিন জোড়া লালাগ্রন্থি রয়েছে:
- প্যারোটিড গ্রন্থি: সবচেয়ে বড়, প্রতি কানের নিচে একটি করে।
- সাবম্যান্ডিবুলার গ্রন্থি: নিচের কৌণিক অঞ্চলের নিচে।
- সাবলিঙ্গুয়াল গ্রন্থি: জিহ্বার নিচে।
লালা: লালাগ্রন্থি থেকে নিঃসৃত। একজন সুস্থ মানুষ দৈনিক ১২০০-১৫০০ মিলিলিটার লালা ক্ষরণ করে। লালার pH 6.2-7.4।
লালার উপাদান:
- পানি: ৯৫.৫% – ৯৯.৫%
- কোষীয় উপাদান: ইস্ট, ব্যাকটেরিয়া, প্রোটোজোয়া, লিউকোসাইট, এপিথেলিয়াল কোষ।
- গ্যাস: অক্সিজেন, নাইট্রোজেন ও কার্বন-ডাইঅক্সাইড।
- অজৈব পদার্থ: সোডিয়াম ক্লোরাইড, পটাশিয়াম, ইত্যাদি।
- জৈব পদার্থ: এনজাইম, মিউসিন, ইউরিয়া, অ্যামিনো এসিড, ইত্যাদি।
লালার কাজ:
- খাদ্যের স্বাদ অনুভব করায় এবং খাদ্যকে ভিজিয়ে নরম করে।
- মিউসিন খাদ্যকে দলায় পরিণত করে।
- সালিভারি অ্যামাইলেজ স্টার্চকে ভেঙে দেয়।
- বাইকার্বনেট মুখের অম্লতা নিয়ন্ত্রণ করে।
- লাইসোজাইম ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে।
- ইম্যুনোগ্লোব্যুলিন অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল সিস্টেমের অংশ।
পরিপাক গ্রন্থীঃ
যেসব গ্রন্থির গ্রন্থি থলি বা গ্রন্থিকোষ বিভিন্ন উৎসেচক সমৃদ্ধ পাচকরস ক্ষরণ করে, তাদের পরিপাক গ্ৰন্থি বলে।
মানবদেহে পাঁচ ধরণের পৌষ্টিকগ্রন্থি রয়েছে, যথা – লালাগ্রন্থি, যকৃত, অগ্ন্যাশয়, গ্যাস্ট্রিক গ্রন্থি ও আন্ত্রিক গ্রন্থি।
১. লালাগ্রন্থি (Salivary glands)
মানুষের মুখগহ্বরের দুপাশে নিচে বর্ণিত তিন জোড়া লালাগ্রন্থি অবস্থিত।
ক. প্যারোটিড গ্রন্থি : এগুলো সবচেয়ে বড় লালাগ্রন্থি। প্রতি কানের নিচে রয়েছে একটি করে মোট দুটি প্যারোটিড গ্রন্থি।
খ. সাবম্যান্ডিবুলার গ্রন্থি : প্রতিমা নিম্নস্তরের কৌণিক অঞ্চলের নিচে একটি করে মোট একজোড়া সাব ম্যান্ডিবুলার গ্রন্থি অবস্থিত।
গ. সাবলিঙ্গুয়াল গ্রন্থি : জিহ্বার নিচে অবস্থান করে একজোড়া সাবলিঙ্গুয়াল গ্রন্থি।
লালা (Saliva)
লালাগ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রসকে লালা বা লালারস বলে। একজন সুস্থ মানুষ দৈনিক ১২০০-১৫০০ মিলিলিটার লালা ক্ষরণ করে। লালা সামান্য অম্লীয়, ফলে মুখ গহ্বরে সব সময় pH 6.2-7.4 মাত্রায় আম্লিক অবস্থা বিরাজ করে।
লালার উপাদান (Composition of saliva)
পানি : ৯৫.৫% – ৯৯.৫%
কোষীয় উপাদান : ইস্ট, ব্যাকটেরিয়া, প্রোটোজোয়া, লিউকোসাইট, এপিথেলিয়াল কোষ ইত্যাদি।
গ্যাস : প্রতি 100 মিলি লালায় 1 মিলি অক্সিজেন 25 মিনিট নাইট্রোজেন এবং 50 মিলি কার্বন-ডাইঅক্সাইড দ্রবীভূত অবস্থায় থাকে।
অজৈব পদার্থ : প্রায় ০.২%; সোডিয়াম ক্লোরাইড, পটাশিয়াম ক্লোরাইড, সোডিয়াম ফসফেট, ক্যালসিয়াম ফসফেট, ক্যালসিয়াম কার্বনেট, পটাশিয়াম ইত্যাদি।
জৈব পদার্থ : প্রায় ০.৩%; এনজাইম (টায়ালিন, লাইপেজ, কার্বনিক এনহাইড্রেজ, ফসফেটে, ব্যাকটেরিও লাইটিক এনজাইম ইত্যাদি), মিউসিন, ইউরিয়া, অ্যামিনো এসিড, কোলেস্টেরল, ভিটামিন, অ্যান্টিজেন, অ্যান্টিবডি ইত্যাদি।
লালার কাজ (Functions of saliva)
লালার অধিকাংশ প্রাণী। খাদ্যের স্বাদ অনুভব এবং পরিপাকের সময় বিক্রিয়া ঘটানোর জন্য পানি খাদ্যের দ্রাবক হিসাবে খাদ্যকে ভিজিয়ে নরম করে।
১. মুখ, জিহ্ববা ও ঠোট লাগায় সিক্ত থাকায় কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ হয়।
২. মিউসিন নামক গ্লাইকোপ্রোটিন খাদ্যের সঙ্গে পিচ্ছিল খাদ্যকে দলায় পরিণত করে। লালা খাদ্য চর্বণ ও গলাধঃকরণ সহায়ক। এসিড ও বেসকে প্রশমন (বাফার) করতেও এটি সাহায্য করে।
৩. ক্লোরাইড (Chloride) : সালিভারি অ্যামাইলেজকে সক্রিয় করে।
৪. সালিভারি অ্যামাইলেজ বা টায়ালিন এনজাইম (Salivary amylase or Ptyaline) : রান্না করা স্টার্চের পলিস্যাকারাইড-কে ভেঙে মলটোজ এবং ডেক্সট্রিন নামক ডাইস্যাকারাইড-এ পরিণত করে।
৫. বাইকার্বনেট (Bicarbonate) : লালার অম্লতা PH 6.2 -7.4 এর মধ্যে বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি বাফার হিসাবে কাজ করে। ফলে মুখে সৃষ্ট এসিডের শক্তি কমিয়ে রাখার মাধ্যমে দাঁতের এনামেল ক্ষয় রোধ করে।
৬. লাইসোজাইম এনজাইম (Lysozyme enzyme) : গৃহিত খাদ্যের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসের মাধ্যমে দাঁতকে রক্ষা করে।
৭. ইম্যুনোগ্লোব্যুলিন (Immuniglobulin) : লালা হচ্ছে এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল সিস্টেমের অংশ।
# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন
Read more